শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫, ০২:০৬ অপরাহ্ন
ফুয়াদ খন্দকার,জামালপুর প্রতিনিধি:
জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে স্কুলের বেতন ও পরীক্ষার ফিস পরিশোধ করতে না পেরে লাবনী আক্তার নামে ৮ম শ্রেনীর এক শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে। গতকাল সোমবার (৪জুন) সরিষাবাড়ীর তারাকান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের তারাকান্দি গ্রামের মুদি দোকানদার লাল মিয়ার মেয়ে লাবনী আক্তার। লাবনী রুদ্র বয়ড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেনীর শিক্ষার্থী ছিল। আগামী ৭ জুন তার অর্ধ বার্ষিক পরীক্ষা। স্কুলের বেতন ও পরীক্ষার ফি বাবদ দুই হাজার ২শ টাকা পরিশোধ করতে হবে বলে স্কুল কর্তৃপক্ষ জানায়।
এর আগে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি করা টাকা নির্ধারিত সময়ে পরিশোধ করতে না পেরে অনেক শিক্ষার্থীকে অপমান-অপদস্ত হতে হয়। এ কারনে সোমবার সকালে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ধার্য করা টাকা না নিয়ে বিদ্যালয়ে যাবে না বলে বায়না ধরে লাবনী। পরে তার বাবা-মা অর্ধেক টাকা জোগাড় করে দিলেও কর্তৃপক্ষের কাছে লজ্জা পাওয়ার ভয়ে বিদ্যালয়ে যেতে রাজি হয়নি লাবনী। এক সময় পরিবারের লোকজন কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়লে বসত ঘরের আড়ার সাথে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে লাবনী।
তারাকান্দি গ্রামের হাবু মিয়া বলেন, রুদ্র বয়ড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কোন সময় টাকা কম নেয় না। তার কাছে কোন অনুরোধই কাজে আসে না।
ওই বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেনী পড়ুয়া এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক উজ্জল মিয়া বলেন, তার মেয়ের বেতন দিতে একদিন দেরি হয়েছিল, এ কারনে তার মেয়েকে রোদে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছিল।
এ ব্যাপারে লাবনী আক্তারের মা ফাহিমা বেগম বলেন, অর্ধেক টাকা জোগাড় করে দেওয়া হয়েছিল কিন্তু তার মেয়ে ভয়ে সেই টাকা নিয়ে স্কুলে যায়নি। পরে ঘরের আড়ার সাথে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে।
এ বিষয়ে পোগলদিঘা ইউপি সদস্য আফজাল হোসেন বলেন, বেতন দিতে না পারায় লাবনী আত্মহত্যা করেছে।
রুদ্র বয়ড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাইফুর রহমান বাছেদ বলেন, বিদ্যালয়ের পাওনা আদায়ের জন্য কোন শিক্ষার্থীকে চাপ দেওয়া হয় না। কোন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করে থাকলে সেটা হয়তো অন্য কোন কারনে করেছে।
সরিষাবাড়ী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ফয়সাল আহমেদ বলেন, সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। পরিবারের কোন অভিযোগ না থাকায় লাশ দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
All rights reserved © 2020-2024 dainikparibarton.com
অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।